রক্তদান হল কোন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের স্বেচ্ছায় রক্ত দেবার প্রক্রিয়া। এই দান করা রক্ত পরিসঞ্চালন করা হয় অথবা অংশীকরণের মাধ্যমে ঔষধে পরিণত করা হয়।
উন্নত দেশে বেশিরভাগ রক্তদাতাই হলেন স্বেচ্ছায় রক্তদাতা, যারা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে রক্তদান করেন। দরিদ্র দেশগুলোতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বেশ কম, বেশিরভাগ রক্তদাতাই কেবল তাদের পরিচিতজনদের প্রয়োজনে রক্তদান করে থাকেন। বেশির ভাগ রক্তদাতাই সমাজসেবামূলক কাজ হিসেবে রক্তদান করেন, তবে কিছু মানুষ পেশাদার রক্তদাতা, অর্থাৎ তারা অর্থ বা কোন ভাতার বিনিময়ে রক্তদান করে থাকেন। আবার রক্তদাতা তার ভবিষ্যত প্রয়োজনে রক্ত পেতে পারেন। রক্তদান অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, তবে কিছু রক্তদাতার যে জায়গায় সূঁচ প্রবেশ করানো হয় সেখানে কালশিরে পড়ে, আবার কেউ কেউ রক্তদানের পর দুর্বলতা অনুভব করেন।
সম্ভাব্য রক্তদাতার রক্ত ব্যবহার যে সব কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তার সবকিছুই পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রক্তের মাধ্যমে ছড়ায় এমন রোগ (যেমন এইচআইভি ও ভাইরাল হেপাটাইটিস) এর পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত। রক্তদাতাকে তার চিকিৎসার ইতিহাস জিজ্ঞাসা করা হয় এবং তার একটি সংক্ষিপ্ত শারীরিক পরীক্ষা করা হয় তা নিশ্চিত করার জন্যে যে রক্তদান তার শরীরের জন্যে ক্ষতিকর হবে না। একজন রক্তদাতা কতদিন পরপর রক্তদান করতে পারবেন তা নির্ভর করে তিনি কী দান করছেন তার ওপর এবং যে দেশে রক্তদান সম্পন্ন হচ্ছে সে দেশের আইনের উপর । তবে প্রতি চারমাস অন্তর অর্থাৎ ১২০ দিন পর পর মানবদেহে নতুন রক্ত তৈরি হয়।
গৃহীত রক্তের পরিমাণ ও পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণতঃ ৫০০ মিলিলিটার (অথবা প্রায় ১ ইউএস পাইন্ট) সম্পূর্ণ রক্ত নেওয়া হয়। পরিসঞ্চালনে ব্যবহৃত বেশির ভাগ রক্ত উপাদানই অল্প আয়ু বিশিষ্ট, এবং এ কারণে অপরিবর্তিত সরবরাহ নিশ্চিত করা একটি সবসময়কার সমস্যা।
0 coment rios: