Thursday, 3 June 2021

রক্তের গ্রুপের নাম ‘গোল্ডেন ব্লাড’

 

রক্তের উপাদানগত বৈশিষ্ট্যের বিচারে রক্তকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই শ্রেণিবিন্যাসকে ব্লাড গ্রুপ (Blood Group) বলা হয়। ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে জীববিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার প্রথম মানুষের রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করেন। এই শ্রেণীবিন্যাসকে সংক্ষেপে ABO ব্লাড গ্রুপ বা সংক্ষেপে ব্লাড গ্রুপ বলা হয়।

সাধারণত মানুষের শরীরে A+, A-, B+, B-, AB+, AB-, O+, O- গ্রুপের রক্ত থাকে। এর মধ্যে পৃথিবীতে সবচেয়ে O+ গ্রুপের মানুষের সংখ্যা বেশী। আবার এর মধ্যে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত খুঁজে পেতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। যেমন, এবি নেগেটিভ (AB-), ও নেগেটিভ (O-), বি নেগেটিভ (B-) ইত্যাদি। কিন্তু এমন কোনও রক্তের গ্রুপের কথা জানেন, যে গ্রুপের মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে মাত্র পঞ্চাশেরও কম। হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য হলেও এটিই বিশ্বের বিরলতম রক্তের গ্রুপ। রক্তের এই গ্রুপের নাম ‘গোল্ডেন ব্লাড’।

এই রক্তের আরএইচ সিস্টেমে ৬১ অ্যান্টিজেনের অস্তিত্ব ছিল না। এই রক্তের নাম দেওয়া হয় ‘আরএইচ-নাল’। সাধারণত, রক্তের কোষগুলোতে ৩৪২টি অ্যান্টিজেন থেকে। এই অ্যান্টিজেনগুলোর কম্বিনেশনই নির্ধারণ করে কোনও রক্তের গ্রুপ ঠিক কী হবে। এই অ্যান্টিজেনের ভিত্তিতে মানুষের রক্তকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলো- ‘এ’, ‘বি’, ‘এবি’ আর ‘ও’। প্রত্যেকটি রক্তের গ্রুপ আবার দুভাগে বিভক্ত ‘পজেটিভ’ এবং ‘নেগেটিভ’। অর্থাত্, সব মিলিয়ে মানুষের শরীরে মোট আট রকমের রক্ত পাওয়া যায়। সেগুলো হল, ‘এ পজেটিভ’, ‘এ নেগেটিভ’, ‘বি পজেটিভ’, ‘বি নেগেটিভ’, ‘ও পজেটিভ’, ‘ও নেগেটিভ’, ‘এবি পজেটিভ’ ও ‘এবি নেগেটিভ’।

১৯৬১ সালে প্রথম এই গ্রুপের রক্তের সন্ধান পাওয়া যায়। এ পর্যন্ত বিশ্বে মাত্র ৪০ জন মানুষের মধ্যে ‘গোল্ডেন ব্লাড’-এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। এই ধরনের রক্ত বিরল হওয়ার কারণে এই গ্রুপটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘গোল্ডেন ব্লাড’। এই ‘গোল্ডেন ব্লাড’-এর অধিকারীদের মধ্যে নয়জন নিয়মিত রক্ত দান করেন।

বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৮০০ কোটি (৭.৬ বিলিয়নের বেশি)। জানা গেছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মধ্যে গত ৫৭ বছরে এমন ৪০ জনকে পাওয়া গেছে, যাঁদের শরীরে এই বিরল গ্রুপের রক্ত রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গোল্ডেন ব্লাডের অধিকারীরা যে কোনও গ্রুপের মানুষকে রক্ত দিতে পারেন তবে সবার থেকে রক্ত নিতে পারেন না। বিরল এই ব্লাড গ্রুপের অধিকারী যে সব মানুষ রয়েছে, তাঁদের খুব সাবধানে জীবন যাপন করা জরুরি।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: